মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ০৫:১৩ অপরাহ্ন
[divider style=”solid” top=”20″ bottom=”20″]স্টাফ রিপোর্টার ॥
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর চরফলকন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবককর্মী টিটুর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে।
জানা যায়, উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণাধীন ইউনিয়ন সেবাকর্মী হিসেবে ৫নং চরফলকন ইউনিয়ন পরিষদে এ সেবাকর্মীর জন্য নির্ধারিত একটি অফিসকক্ষও বরাদ্ধ রয়েছে। যেখানে এলাকার গরীব নদীভাঙ্গা পরিবারের লোকজন অল্পমূলে গরু-ছাগ, হাঁস-মুরগীর প্রাথমিক চিকিৎসেবা পাওয়ার কথা। সেখানে সেবার দরজা বন্ধ পেয়ে নিরুপায় কিছু মানুষের শেষ সম্বল গবাদি পশুগুলো নিয়ে অতিরিক্ত টাকা ব্যয়ে ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে সেবককর্মীর ব্যবসায়িক দোকান ও প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে সেবা নেয় তারা। ইউনিয়ন সেবাকর্মীর উপর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার মনিটরিংয়ের অভাবে এমনটাই বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। প্রত্যেক দিন সেবাবঞ্চিত হয়ে ক্ষোভ নিয়ে বাড়িতে ফিরে ভুক্তভোগী মানুষ। শুধু তাই নয়, গরু-ছাগলের ভ্যাকসিনের যন্ত্রাদি এবং গুরুত্বপূর্ণ ঔষধাদি নিরাপদ রাখার ফ্রিজ তার ব্যক্তিগত দোকানে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দাবড়ে কাজ করেন। ফলে ওই ইউনিয়নের হাজার হাজার সেবাকর্মীর সেবা থেকে বঞ্চিত। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ-হতাশা অন্যদিকে অসুস্থ গবাদি পশুর জন্য মারাত্মক হুমকিও। প্রত্যেহ সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার সাহেরেহাট, চরজাঙ্গালিয়া, চরকাদিরা, তোরাববগঞ্জ, পাশ্ববর্তী রামগতি উপজেলার চরবাদাম, আলেকজান্ডার ও পোড়াগাছা ইউনিয়ন এবাং লক্ষ্মীপুর সদর তেহরীগঞ্জসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে কাজ করার অভিযোগ এ সেববাকর্মীর বিরুদ্ধে।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে চরফলকন ও পাটারীরহাট এলাকার গরু মালিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কৃত্রিক প্রজননের মাধ্যমে জাত উন্নত গরুর জন্য সরকার কমমূল্যে বীজ প্রদান করেন। অথচ সরকারের উন্নত কৃত্রিম প্রজনন বীজের চেয়ে প্রাইভেট কোম্পানী ব্র্যাক ও এ্যাকমির কৃত্রিম প্রজনন বীজ অধিক উন্নত। শুধু তাই নয়, প্রাইভেট ওই বীজকে পাকিস্তানী, ইন্ডিয়ান ও অট্রেলিয়ার উন্নত বীজের ‘সাফাই’ দিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে ৩০-১৫০ টাকার বীজ বিক্রি করেন ১ হাজার টাকা। যাহা একদিকে সরকারের কৃত্রিম প্রজননের বীজের গুনগত মানের বদনাম অন্যদিকে প্রাইভেট বীজ দিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে নিজের পকেট ভারী করছেন। গরুর মালিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার আক্তারুজ্জামান যদি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবী অফিসে পরিদর্শন সঠিকভাবে করতে তাহলে আমরা সেবা থেকে বঞ্চিত হতাম না।
স্থানীয় চরফলকন ইউনিয়ন সেবাকর্মী টিটু জানান, অত্র ইউনিয়ন সেবাকেন্দ্রে আমি নিয়মিত গিয়ে ছিলাম। বর্তমানে ওই কেন্দ্রে যাওয়া-আসা কম হয় বলে তিনি জানান। তবে গরু মালিকদের ফোন ফেলে যথাসময়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা ডাক্তার আক্তারুজ্জামান জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক যারাই রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে চরফলকন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবককর্মী টিটুকে এর আগেও অফিস অনিয়মসহ নানা বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান একর্মকর্তা।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমতিয়াজ হোসেন জানান, সরকারি যে কোন সেবার কাজে হয়রানি বরদাস্ত করা হবে না। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।