শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম:
সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান কামাল এমপি আর নেই বই কেনার জন্য মাইর খাওয়া! – মেহেনাজ সুলতানা যদি রেকর্ড করে শোনাতে পারতাম-ফারহানা আক্তার দৃষ্টি সাউথ এশিয়া গোল্ডেন পিস এ্যাওয়ার্ড-২০২১ পেলেন শাম্মী তুলতুল লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে শেখ রাসেল দেয়ালিকা উদ্বোধন লক্ষ্মীপুরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী আব্দুল মতলব’র ব্যাপক গণসংযোগ রায়পুরে বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে ১৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ রায়পুরে নবনির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করলেন নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি রায়পুর উপজেলা ডিজিটাল সেন্টার উদ্বোধন করেন এড. নয়ন এমপি

পূর্ব টুমচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়ম দূর্ণীতি (২)

অনলাইন সম্পাদনা / ১০৭৩ পড়া হয়েছে:
প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন

স্লিপ ফান্ডের টাকা নয়ছয় ॥ মালামাল চুরির ফাইল স্থগিত

[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]# ভিন্ন ভিন্ন ভাউচারে একই উপকরণ ক্রয়ের বিল পাশ

# নিলামের টাকা জমা নেয়নি কর্তৃপক্ষ

# ভবনের মালামাল উদ্ধারে ছিলনা কোন উদ্যোগ

# তদন্ত করেই শেষ, নেয়নি কোন আইনি ব্যবস্থা

# চোর সনাক্ত না করেই সন্দেহাতিত ভাবে অভিযুক্ত নয় বলে তদন্ত রিপোর্ট পেশ[/box]

অনিয়ম ও দুর্ণীতিতে ঝড়ে পড়ছে পূর্ব টুমচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত এ বিদ্যালয়ে রয়েছে স্লিপ ফান্ড (সরকারি বরাদ্ধ) এর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে সরকারী ভাবে এ প্রতিষ্ঠানে স্লিপ ফান্ডের (স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্লান ) টাকা ভূয়া ভাউচার দেখিয়ে নয়ছয় করার অভিযোগ রয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে। তবে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসি বেগম কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেছেন, সারা দেশেই এ বরাদ্ধে অনিয়ম হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষা উপকরণ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষা সংশ্লিস্ট ব্যয়ের জন্য পূর্ব টুমচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। উক্ত বরাদ্ধের অনুকূলে ৬ জোড়া নিম্নমানের লো এবং হাই বেঞ্চ, বঙ্গবন্ধু বুক কর্ণার, সততা স্টোর, ১টি কাঠের চেয়ার ও সহায়ক বই কিনে ৫০ হাজার টাকার বিল ভাউচার পাশ করেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, নিম্নমানের ২টি বোর্ডের আলমিরা (বঙ্গবন্ধু বুক কর্ণার ও সততা) স্টোর ক্রয় করা হয়েছে। যার বিল ধরা হয়েছে ১৫৫০০ টাকা। নিম্নমানের কাঠের চেয়ার এর বিল ধরা হয়েছে ৫০০০টাকা। অতি নিম্নমানের ৬ জোড়া বেঞ্চ ক্রয় করা হলেও ২টি ভাউচারে ৯ জোড়া বেঞ্চ দেখানো হয়েছে। যার মূল্য ধরা হয়েছে২৭৫০০টাকা। আবার আল ন্রু ওয়ার্কশ এর মেমোতে বেঞ্চ এর সাথে একটি স্টিল আলমিরা ১৮৫০০ টাকা ধরা হলেও তা কেটে দেওয়া হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানের মেমোতে আবার ৬ জোড়া বেঞ্চ এর মূল্য ১৯২০০ থাকলেও কথায় পঁচিশ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। এসব উপকরণে নয়ছয় হিসাব দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। অথচ এসব উপকরণ এর প্রকৃত মূল্য ২৫ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়াও ভাউচার গুলিতে একই হাতের লেখা ও কাটাছেড়া রয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসি বেগম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুজ্জামান যোগসাজস করে এ অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
অর্থ আত্মসাৎ ও ভূয়া ভাউচার এর বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসি বেগম কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি ভাউচার অনুযায়ী পন্য ক্রয় করা হয়েছে বলে দাবী করেন। কাটা ছেড়া ও একই ভাউচারের অংকের সাথে কথায় হিসাবের মিল না থাকা নিয়ে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।
আরো অভিযোগ উঠেছে, প্রতি বছর প্রায় একই উপকরণ ক্রয় দেখিয়ে বা একটু অদল-বদল করে বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্লিপ ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ করায় সরকারের লাখ লাখ টাকা ভেস্তে যাচ্ছে। হচ্ছে না শিক্ষার মান উন্নয়ন ও কাক্ষিত উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন।
এদিকে একই স্কুলের ভেঙ্গে ফেলা ভবনের নিলামকৃত মালামাল চুরি ও এ সংক্রান্ত নাটকীয় তদন্ত শেষে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক কামরুদ্দিনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ওই ফাইল স্থগিত রাখার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) হাসিনা আক্তার জানান, স্লিপ ফান্ডের অর্থ আত্মসাৎ করার সত্যতা মিললে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া মালামাল চুরির ঘটনার সময়কালীন তিনি ক্লাস্টার অফিসার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। সহকারি শিক্ষক কামরুদ্দিনকে অভিযুক্ত করে প্রধান শিক্ষকের দায়ের করা অভিযোগটি তদন্ত করেন তৎকালিন শিক্ষা অফিসার মনিরুজ্জামান মোল্লা। তিনি প্রাথমিক তদন্ত করে অভিযুক্ত কামরুদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে পূণরায় তদন্ত করে চুরির বিষয়ে তার কোন সংশ্লিষ্টটা নেই বলে রিপোর্ট দিয়ে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। ওই বিষয়ে আর কোন ব্যবস্থা বা প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি অনেক পুরোনো। এ বিষয়ে সাবেক শিক্ষা অফিসার মনিরুজ্জামান মোল্লা ভালো বলতে পারেন।
এত বড় একটি বিষয়ে নাটকীয় তদন্ত করে অর্থের বিনিময়ে অভিযুক্তকে অব্যাহতি দিয়ে চুরির মালের কোন হদিস বের না করা ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করার বিষয়টি রহস্যজনক বলেও মন্তব্য করেন এলাকাবাসী।
স্লিপ ফান্ডের টাকা নিয়ে অনিয়ম ও মালামাল চুরির ফাইল স্থগিত ও নিরবতা থাকা নিয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, স্লিপ ফান্ডের টাকায় অনিয়ম সারা দেশেই হচ্ছে। আমি নতুন যোগদান করেছি। তারপরও কোনো বিদ্যালয়ের অভিযোগ আসলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া ওই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন হচ্ছে আমার জানা নেই। মালামাল চুরির ঘটনায় মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নোটিশ দিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে মুঠোফোনে নির্দেশ দেন। চলবে…..