শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ০৩:০৭ পূর্বাহ্ন
শেখ সাহেবের নামে কিল্লায় তার পদধুলি আছে কিন্তু নেই তার স্মৃতি চিহ্ন। কালের বির্বতনে হারিয়ে যেতে শুরু করছে তার স্মৃতিগুলো। শুধু নামেই তাকে স্মরণ রাখছে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চর পোড়া গাছার বঙ্গবন্ধু প্রেমী জনগণ। এটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কিল্লা যা উপজেলার চর পোড়া গাছায় অবস্থিত।
এই গ্রামে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক শেখের কিল্লা ঘিরে সাধারণ মানুষের আবেগ,অনুভূতি এবং স্মৃতির শেষ নেই। কিন্তু নেই কোন স্মৃতি চিহ্ন। যা ধারণ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু ও তারই পদধুলি নেওয়া এই কিল্লাকে ঘিরে তাকে স্মরণ করতে পারবে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী রামগতিতে এক মহাসমাবেশের প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কোদাঁল দিয়ে মাটি কেটে সমাবেশের মঞ্চ তৈরী করেছিল নেতা কর্মী ও সাধারণ জনগন। মাটির মঞ্চে শেখ মুজিব দেশ পূর্ন গঠন ও অর্থনৈতিক মুুক্তির ঘোষনা দিয়েছিলেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ তৎকালীন এই মহানায়ককে এতটাই ভালবেসে সেই মঞ্চের নাম দিয়েছে শেখের কিল্লা। সেই থেকে এই স্থানটি লোকমুখে শেখের কিল্লা নামে সু-পরিচিত। কিন্তু এই স্থানে বঙ্গবন্ধুর নামে বা তার স্মৃতি সংবলিত কোন স্থাপনা না থাকায় নতুন প্রজন্ম ধারণ করছেনা তার স্মৃতি।
শেখের কিল্লা সমাবেশের প্রত্যক্ষদর্শী তৎকালীন রামগতির স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান মুক্তিযোদ্ধা শফিক কমান্ডার সেই দিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, শেখের কিল্লায় দাড়িয়ে বঙ্গবন্ধু কৃষক, শ্রমিক ও জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন দেশ আমাদেরকেই গড়তে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে। দেশের জনগনকে ক্ষুধামুক্ত করতে হবে। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে দেশ গড়া ও অর্থনৈতিক মুক্তি আন্দোলনকে এিেগয়ে নিতে হবে। বক্তব্য শেষে বঙ্গবন্ধু কোঁদাল দিয়ে মাটি কেটে রাস্তা তৈরীর কাজও উদ্বোধন করেছিলেন। সেই দিন উপস্থিত জনতার অংশগ্রহনে প্রায় দুই কিলোমিটার মাটির রাস্তা তৈরী হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আগমনের ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও বঙ্গবব্ধুর পদধূলি জমে থাকা সেই স্থানে স্মৃতি ধরে রাখা এবং বর্তমান তরুন প্রজন্মকে এ প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা প্রয়োজন। তবে স্থানটি চিহ্নিত করতে ২০১৩ সালে মাইল ফলক স্থাপন করে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব রুরাল পুয়র (ডরপ)। সম্প্রতি স্থানটি পরিদর্শন করে বঙ্গবন্ধু শেখের কিল্লা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণেরও ঘোষনা দিযেছেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। স্থানীয়দের প্রত্যাশা ছিল মন্ত্রীর ঘোষনার পর মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে স্তম্ভটির দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে। কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় স্থানীয় জনগন এবং শেখের কিল্লা স্মৃতি ইতিহাস রক্ষা কমিটি খুবই হতাশ। তবে একটি কুচক্রি মহল ব্যবসায়িক ও স্বার্থ হাসিলের জন্য স্তম্ভটি সঠিক স্থানে না করে ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত গুচ্ছ গ্রামে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণের জন্য বিভিন্ন মহলে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসী এবং শেখের কিল্লা স্মৃতি ইতিহাস রক্ষা কমিটির প্রানের দাবী যেখানে বঙ্গবন্ধু কোদাঁল দিয়ে মাটি কেটেছেন সেই স্থানে যেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও বঙ্গবন্ধু শেখের কিল্লা স্বপ্ন কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়।
-ল/আ, মো: জহির উদ্দিন, রামগতি