শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম:
সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান কামাল এমপি আর নেই বই কেনার জন্য মাইর খাওয়া! – মেহেনাজ সুলতানা যদি রেকর্ড করে শোনাতে পারতাম-ফারহানা আক্তার দৃষ্টি সাউথ এশিয়া গোল্ডেন পিস এ্যাওয়ার্ড-২০২১ পেলেন শাম্মী তুলতুল লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে শেখ রাসেল দেয়ালিকা উদ্বোধন লক্ষ্মীপুরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী আব্দুল মতলব’র ব্যাপক গণসংযোগ রায়পুরে বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে ১৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ রায়পুরে নবনির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করলেন নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি রায়পুর উপজেলা ডিজিটাল সেন্টার উদ্বোধন করেন এড. নয়ন এমপি

সংবাদ প্রকাশের জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসনের অভিযান

/ ১১৮৪ পড়া হয়েছে:
প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

মেঘনা নদী অভয়াশ্রম এলাকায় (রায়পুর অংশে) মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ” সময়ে অভিযান পরিচালনা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর আলো পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন! জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় রায়পুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরীন চৌধুরী অভিযান চালিয়েছে। ২০ এপ্রিল রায়পুর এলাকার মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় সরকারের জারিকৃত আদেশ অমান্য করে গোপনে  জাটকা মাছ ধরায় উপজেলা মৎস্য বিভাগ, পুলিশ এবং কোস্ট গার্ড,বাংলাদেশ এর সমন্বয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে।
এসময় জাটকা সংরক্ষণ অভিযানে দুই ইঞ্জিন চালিত একটি কাঠের নৌকা, ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল এবং আনুমানিক ১২০কেজি জাটকা মাছসহ আটক করা হয় ১১জন জেলেকে। মোবাইল কোর্টের আওতায়  আটককৃত আসামি ১১ জনের মধ্যে যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে অপ্রাপ্তবয়ষ্ক ০২জনকে মুচলেকা নিয়ে স্থানীয় মেম্বারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়, অপর ০৯ জনের মধ্যে মাঝি ও তার সহযোগীসহ ০৩ জনের প্রত্যেককে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন,১৯৫০ এর ৫(১)ধারায় ৩০০০ টাকা করে মোট ৯০০০ টাকা জরিমানা ও ১ (এক)বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ০৬ জনকে ১(এক) বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
জব্দকৃত মালামালসমূহঃ ইঞ্জিন চালিত কাঠের নৌকা ০১ টি, জাটকা আনুমানিক ১২০ কেজি ( জাটকা মাছগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাটিতে পুঁতে বিনষ্ট করা হয়) কারেন্ট জাল আনুমানিক ১০,০০০ মিটার (জালগুলো পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়)
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরীন চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসে মানুষকে ঘরে ঢুকানো,  ত্রাণ দেওয়া, মাছ শিকারীদের ধরা সব কার্যক্রম জনস্বার্থে এবং দেশের সম্পদ রক্ষার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য , গত সপ্তাহের নিউজ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সংবাদটি ছিলো যথাক্রমে,  মৎস প্রশাসন ও কোষ্টগার্ড ম্যানেজ জাটকা নিধনেরায়পুরে ইলিশশূণ্য  করছে জেলেরা মেঘণাকে, জেলেদের অভিযোগ সরকারি সহায়তা মাস পেরিয়েও পায়নি এখনো! গ্রামে গ্রামে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ইলিশ, রায়পুরে নিষেধাজ্ঞা আমান্য করে নদীতে নামছেন জেলেরা, রায়পুরের মেঘনা নদীতে যেন ইলিশ শিকারের ধুম চলছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিদিনই দলবদ্ধ হয়ে নদীতে নামছেন জেলেরা। প্রশাসনের জোরালো তদারকির অভাব ও উপকূলীয় এলাকার জনপ্রতিনিধি ও ঘাটের সন্ত্রাসী বাহিনীর  মদদে নদীতে অবাধে মাছ শিকার চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ভ্যান ও রিকশাযোগে ফেরি করে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে জেলেদের। এর মধ্যে জাটকা কিংবা মা ইলিশও রয়েছে। তুলনামূলক কম দাম হওয়ায় ক্রেতারাও সেগুলো লুফে নিচ্ছে। ফেরি করে মাছ বিক্রি করা দুজনের কাছ থেকে জানা যায়, ঝাটকা ধরতে কোষ্টগার্ড নদীতে সহযোগিতা করে আর বাজারে বিক্রি করতে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, সাথে সাহস যোগান দেয় ক্ষমতাশীন দলের ঘাট কেন্দ্রীক নেতারা।
প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত রিকশা ও ভ্যানযোগে মাছ বিক্রি করছেন জেলেরা। প্রকাশ্যে ইলিশ বেচাকেনা চললেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের যেন নজর নেই। রায়পুরের খাসের হাট, চেয়ারম্যান ঘাট, সাজু মোল্লার ঘাট, শহর আলীর মোড়, চরভৈরবী,  রায়পুরের চরকাছিয়াসহ মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় গতকাল বিকেলেও মাছ ধরা হয়েছে সরেজমিন দেখা  গেছে। এই সময়ে কর্তব্যরত মৎস কর্মকর্তা এবং কোষ্টগার্ডের কেউ নদীতে ছিলেন না।
জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের অভয়াশ্রম হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা মাছ শিকারে যাচ্ছে।
বেসরকারি বিভিন্ন তথ্য মতে, লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় ৬২ হাজার জেলে রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার ২৫২ জন নিবন্ধিত। কিন্তু মার্চ-এপ্রিল নিষেধাজ্ঞার এই দুই মাস ২৪ হাজার ৬৩০ জেলে সরকারি খাদ্য সহায়তা পাবেন। বাকি জেলেরা কার্ডধারী হলেও খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না। আবার এসব জেলে নিষেধাজ্ঞার এই সময় অন্য কোনো কাজও করেন না। এ জন্য দাদনদার ও আড়তদারদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে হয়। পরে দাদনদার ও আড়তদারদের চাপে পড়ে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে মাছ শিকারে যাচ্ছেন অনেকেই।
চরাঞ্চলের বাসিন্দা তারেক মাহমুদ  বলেন, প্রশাসনের তদারকির অভাবে গ্রামে গ্রামে এখন ফেরি করে ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযান নিয়ে আরো প্রচার-প্রচারণা ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা পরিষদের এক চেয়ারম্যান বলেন, মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধির জন্য সরকার জেলেদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে না এখনো করোনা ভাইরাসের কারনে এর সুযোগে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও নদীতীরের জনপ্রতিনিধিদের মদদে কোষ্টগার্ডের সহযোগিতায় জেলেরা অবাধে নদীতে নামছেন। এতে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রায়পুর উপজেলা  মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘অভিযান সফল করতে প্রত্যেকটি মাছঘাট ও বরফকল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জেলেরা পর্যাপ্ত মাছ পাওয়ায় এখন কেউ কেউ গোপনে নদীতে যাচ্ছে। খবর পেলে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। ইতিমধ্যে আমরা জেল-জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
অন্যদিকে জাটকা আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ে জেলেদের মাঝে মানবিক খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য  ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে প্রথমবারের মতো উন্মুক্ত পদ্ধতিতে জেলে যাচাই-বাছাই করা হয়। এতে বাচাই কার্যক্রমে প্রধান অতিথি ছিলেন রায়পুর উপজেলার নারী ইউএনও সাবরীন চৌধুরী। সমন্বয়ক এর দায়িত্ব পালন করেন মৎস কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন।  রায়পুরে এই প্রথম যে কোন সরকারের সামাজিক কর্মসূচির প্রতিটি সেক্টরে বাছাই কার্যক্রমে সাধুবাদ জানাচ্ছে সুবিধাভোগি ইচ্ছুকরা। আঃআলী নামে এক মৎসজীবি জানিয়েছেন, তালিকায় যদি নাম নাও উঠে তাতে দুঃখ থাকবে না কারন, ইউএনও আপা নিজে যাচাই – বাচাই করে তালিকা করবেন বলেছেন।