কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সারা বিশ্ব অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে।বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার যত বাড়ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগও ততটাই ঘনীভুত হচ্ছে।এইতো বেশ কিছুদিন আগেও আমরা অনর্গল গল্প করতাম উন্নয়নশীল বাংলাদেশ,ভবিষ্যৎ অর্থনীতি , সম্ভবনার দুয়ার আর সুনিশ্চত ভবিষ্যত অগ্রযাত্রা নিয়ে।হঠাৎকরে চীনের উহান প্রদেশে আবিষ্কৃত অদৃশ্যমান ভাইরাসের থাক্কায় দাড় করিয়ে অনিশ্চিত এক বিপদের মুখে। এতে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিক শক্তিশালী দেশগুলোও।পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতিক দেশ আমেরিকার গড় জিডিপি ছিল ২০.৪৯ দশমিক ট্রিলিয়ন ডলার।আজ তারা সবচেয়ে বেশি কোনঠাসায় জীবন পার করছে।পরিবর্তন করে দিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক রূপরেখা।
তৃতীয় বিশ্বের মত বাংলাদেশ ও করোনায় আক্রান্ত।চীন ও আমেরিকার মত এত খারাপ পরিস্থিতি না হলেও লক ডাউনে বির্পযস্থ আমাদের আর্থসামাজিক রূপরেখা।প্রভাব পড়ছে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায়।স্থগিত রয়েছে বড় বড় কারখানার উৎপাদন।
বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৩ শতাংশ আসে গার্মেন্টস শিল্প থেকে।বাংলাদেশে এই শিল্প টিকে আছে ইউরোপ এবং আমেরিকার বাজারের উপর নির্ভর করে।৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি করা হয়। গ্লোবাল ট্রেড ইম্প্যাক্ট অব দ্য করোনা ভাইরাস এপিডেমিক শিরোনামে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাকশিল্প খাত, কাঠ ও আসবাব শিল্প এবং চামড়াশিল্পে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। চীনের অর্থনৈতিক বিপর্যয় এর কারণে দেশের চামড়া শিল্পে ১৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। অন্যদিকে বস্ত্র শিল্প ও আসবাব শিল্পে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে ১ মিলিয়ন ডলার করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের হিসেবে সাধারণ ছুটির একমাসে দেশের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১ লাখ ২ হাজার ৩শ কোটি টাকা। যা দৈনিক কমপক্ষে ৩৩০০ কোটি টাকা। কৃষি মৎস ও প্রাণিসম্পদ খাতে অর্থনৈতিক অবরুদ্ধ অবস্থার কারণে প্রতিদিন ২শ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে, শিল্প অনুমিত ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ১শ ৩১ কোটি টাকা।তবে অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার সেবা খাত। প্রতিদিনের ক্ষতি হচ্ছে ২০০০ কোটি টাকা। সবশেষে চলতি বছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তাতে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
এত কিছুর মাঝেও আমাদের জন্য কিছুটা আশার বাণী হচ্ছে – চীনের কিছু ক্রয় আদেশ বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম কমায় এর আমদানি খরচ আগের চেয়ে কমবে যা শিল্পের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ কমাবে। সরকার কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারলে এর দ্বারা সাধারণ মানুষ ও উপকৃত হতে পারে।
[author title=”লেখক:” image=”http://”]আজমীর হোসাইন পিয়াস
শিক্ষার্থী
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়[/author]